
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে ছাত্রদল সমর্থিত 'ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম' প্যানেল থেকে একমাত্র বিজয়ী হয়েছেন জাতীয় নারী ফুটবল দলের সদস্য মোছা. নার্গিস আক্তার। তিনি ক্রীড়া সম্পাদক পদে সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম অডিটোরিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. এফ নজরুল ইসলাম।
২৩টি পদে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ২০টিতেই জয়ী হয়েছেন ছাত্রশিবির সমর্থিত 'সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট' প্যানেলের প্রার্থীরা। বাকি তিনটি পদের মধ্যে একটি জিতেছেন 'আধিপত্যবাদ বিরোধী ঐক্য'-এর জিএস প্রার্থী সালাউদ্দিন আম্মার, আরেকটি স্বতন্ত্র প্রার্থী তোফায়েল আহমেদ তোফা (বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক)। আর ক্রীড়া সম্পাদক পদে বিজয়ী হয়েছেন নার্গিস আক্তার।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নার্গিস আক্তার। জাতীয় নারী ফুটবল দলে খেলা এই শিক্ষার্থী খেলাধুলার উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়েই অংশ নিয়েছিলেন নির্বাচনে। ভোটের লড়াইয়ে তিনি তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীকে উল্লেখযোগ্য ব্যবধানে হারান।
নার্গিস জানান, “এই জয় শুধু আমার একার নয়। এটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জয়। আমি কৃতজ্ঞ তাদের প্রতি, যারা আমার ওপর আস্থা রেখেছেন। খেলাধুলা শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়, এটি নেতৃত্ব, শৃঙ্খলা ও আত্মবিশ্বাসেরও প্রতীক। আমি চাই, রাবির প্রতিটি শিক্ষার্থী খেলাধুলায় সক্রিয়ভাবে অংশ নিক, বিশেষ করে মেয়েরা যেন সমান সুযোগ পায়।”
নির্বাচনে ছাত্রদল প্যানেলের ভিপি প্রার্থী শেখ নূর উদ্দীন (আবীর) পেয়েছেন ৩ হাজার ৩৯৭টি ভোট। সেখানে ছাত্রশিবির সমর্থিত সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান (জাহিদ) পেয়েছেন ১২ হাজার ৬৮৭ ভোট।
নির্বাচনে প্রার্থীদের মধ্যে নারীদের অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখযোগ্য। তবে বিজয়ী হয়েছেন একমাত্র নার্গিস। তার এই সাফল্য বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী নেতৃত্ব ও খেলাধুলার বিকাশে ইতিবাচক বার্তা দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন অনেকেই।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ কেউ ফলাফলকে রাজনৈতিক বাস্তবতার প্রতিফলন বললেও, অনেকে নার্গিসের বিজয়কে নারী ক্ষমতায়নের প্রতীক হিসেবে দেখছেন।
এদিকে নবনির্বাচিত ক্রীড়া সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি হল ও বিভাগে খেলাধুলার পর্যাপ্ত সুযোগ নিশ্চিত করতে কাজ করবেন তিনি। বিশেষ করে মেয়েদের জন্য আলাদা ক্রীড়াচর্চার পরিবেশ তৈরি করাই হবে তার অন্যতম অগ্রাধিকার।